আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক| কেমন আছেন সবাই? অনেক দু:খিত, কারণ অনেকদিন পরে পোস্ট দিচ্ছি|অনেক ব্যাস্ত ছিলাম, কিন্তু আপনাদের জন্য সবসময়ই পোস্ট লিখতে ইচ্ছা করে|
আমাকে একটি ফিটনেস টিপস দিতে বললে আমি প্রথমেই কি টিপস দেই জানেন? পরামর্শ দেই যে: রাতের খাবার ঘুমানোর অন্তত: তিন ঘন্টা আগে খাবেন|
আমরা বাঙালিরা সাধারণতঃ ঘুমাতে যাবার আগে, রাত ১০-১১ টায় রাতের খাবার খেয়ে অভ্যস্ত| তাই না? রাতের খাবার খেয়েই আমরা দেই ঘুম| কোনো নড়া চড়া নেই, কেউ আবার খেয়েই শুয়ে শুয়ে রাত জেগে টিভি দেখে, কম্পিউটারে কাজ করে|এতে কোনো শারীরিক কাজ কর্ম কিন্তু হয় না|এটা যে কত খারাপ তা বলার অপেক্ষা রাখে না|গবেষনায় দেখা গেছে, রাতে দেরি করে খেলে হার্টের সমস্যা,ওজনাধিক্য,ডায়বেটিসের সমস্যা দেখা দেয়|
বাইরের দেশগুলোতে কিন্তু এর উল্টোটি দেখা যায়| ওখানে রাতের খাবার ৭ টার মধ্যে খাওয়া হয়|অনেকে দিনের আলো থাকতেই রাতের খাবার শেষ করে|তাইতো ওরা এতো ফিট ও কর্মঠ|
রাতের কেন খাবার তাড়াতাড়ি খাবেন?
ভরা পেটে খেয়েই শুয়ে পড়লে বা রাতের খাবার দেরি করে খেলে এর পরে আমাদের আর কোনো শরীরক কাজ হয় না| ফলে খাবারের ক্যালোরি আমাদের শরীরে ফ্যাট হিসাবে জমা হয়| খাবারগুলোও ঠিক মতো হজম হয় না|ফলে ওজন বেড়ে যেতে পারে|
কিন্তু আপনি যদি ঘুমানোর অন্তত: তিন ঘন্টা আগে খাবার খান, তাহলে ঠিক মতো খাবার হজম হবে| কারণ আপনার কাজের মাধ্যমেই খাবার সঠিক ভাবে হজম হবে ঘুমানোর আগেই| আর ভারি খাবার হজম হতে অন্তত: তিন ঘন্টা তো লাগেই|
ভাবছেন রাতে ঘুমানোর তিন ঘন্টা আগে খেলে রাতে ক্ষুধা পাবে, ফলে ঘুমাতে পারবেন না? কিন্তু তা নয়| একটু ক্ষুধা ভাব আপনার শরীরকে ফ্যাট ক্ষয় করার প্রক্রিয়ায় নিয়ে যাবে, শরীরের সঞ্চিত ফ্যাট বার্ন হবে, ওজন কমবে| সকালে ক্ষুধা লাগবে, ফলে আপনি সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে পারবেন|ভালো মতো নাস্তা করে কাজে যেতে পারবেন|এই প্রক্রিয়াকে বলে রাতে রোজা রাখা| ওজন ঠিক রাখতে বা কমাতে, রাতে নাহয় রোজা রাখলেন|
এই হেলদি লাইফস্টাইলের অভ্যাস করলে আমাদের দেহের পরিপাকতন্ত্রের বিশ্রামও হয়। কারণ, সারাদিন খাবার হজম করতে পরিপাকতন্ত্র অনেক পরিশ্রম করে। রাতের তাড়াতাড়ি খাবার খাওয়া শেষ করলে পরিপাকতন্ত্রকে বিশ্রাম করার সুযোগ দেয়া যায়।
রাতের খাবার ঘুমানোর তিন ঘন্টা আগে খেলে রাতে পরিপাকতন্ত্র যেহেতু বিশ্রামের সুযোগ পায়, তাই তখন ঘুমও ভাল হবে।
গবেষণায় দেখা গেছে যারা দেরি করে রাতের খাবার খায় তাদের ৫৫% এর মাঝে হৃদরোগ হবার ঝুঁকি থাকে। তাই রাতের খাবার তিন ঘন্টা আগে খেলে হৃদরোগের সম্ভাবনা থেকে মুক্ত থাকা যায়।
একটানা অনেক দিন যদি বেশি রাতে না খাওয়া হয়, তাহলে তা হৃদরোগী এবং স্থূলতার সমস্যা যাদের আছে তাদের জন্য বেশ উপকারি। কারন এই অভ্যাস ghrelin নামক ক্ষুধার হরমোনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, ফলে ক্ষুধা কম লাগে। কারণ, দেখা গেছে এই হরমোন অধিকাংশ সময় স্থূল মানুষদের মধ্যে অকার্যকর থাকে।
রাতের খাবার ঠিক সময়ে খেলে তা দেহ থেকে বিষাক্ত পদার্থ বা টক্সিন বের করে দিতে পারে|রোজা রাখলে শরীর যেভাবে টক্সিন বের করে সেভাবে|
রাতে তাড়াতাড়ি খেলে সঠিক সময়ে কম ক্ষুধা নিয়ে খাওয়া হতে পারে, ফলে কম খাওয়া হলে, এটি ইন্সুলিনের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
খাদ্যের ক্যালরি এবং আমাদের শরীরে এর প্রভাব জানতে ক্লিক করুন|
রাতের খাবার দেরি করে খেলে কি কি সমস্যা হতে পারে?
খাবার ঠিক মতো হজম হবে না, পুরোটাই ফ্যাট হিসাবে সঞ্চিত হয়ে ওজন বাড়াবে
হজমের সমস্যা, যেমন: বুক জ্বালা পোড়া, গ্যাস, ঢেকুর, হজমের সমস্যা, মাথাব্যথা, ফুসফুসে প্রদাহ ইত্যাদি হতে পারে|
অনেক দিন ধরে এরকম অনিয়ম হলে খাদ্যনালির ক্যানসারও হতে পারে বেল ধারণা করা হয়। কারণ, অ্যাসিডিটি সমস্যার জন্য রোগীরা সাধারণত যেসব ওষুধ সেবন করেন, সেগুলো বেশি দিন ব্যবহার করলে ক্যানসারের হতে পারে।
ওজন বেশি হলে হার্টের সমস্যা, ডায়বেটিসের সমস্যা ও নানাবিধ শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়|
তাই উপরোক্ত কারণগুলোর জন্যে রাতের খাবার ঘুমানোর অন্তত: তিন ঘন্টা আগে খান|আপনার স্বাস্থ্য আপনারই হাতে|এই একটি হেলদি লাইফস্টাইল আপনাকে দিতে পারে ফিট, মেদ বিহীন স্বাস্থ্য| তাই দেরি না করে আজই শুরু করুন এই হেলদি লাইফস্টাইল| আমাদের সবারই উচিত নিজের ও পরিবারের সবার স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেয়া|
তাই এই ফিটনেস টিপসটি সবার সাথে শেয়ার করে সবার উপকার করুন|
ফিটনেস সম্পর্কে আর কি জানতে চান তা আমাকে জানান|
সারাদিনের খাবারগুলো কখন ও কিভাবে খাবেন? জানতে ক্লিক করুন|
এই পোস্টটি ভালো লাগলে, সবার সাথে শেয়ার করুন এবং পোস্টটির রেটিং দিন |
Post a Comment
Thanks For Comments